moheshkhali
Saturday, September 28, 2013
Wednesday, September 25, 2013
I wish to make the place I bought below, the lush green field (well, only a small part of it), into a glamorous campsite. People from all over the world will go to enjoy calm and quiet peaceful holiday time, in camp like setting but with the best of amenities, with internet, bicycles, may be Alooz chips in the nearby store remaining open all night!
Of course, Bandarban is a better choice with white water rafting and kayaking possibilities. All it takes is to start doing it!
Of course, Bandarban is a better choice with white water rafting and kayaking possibilities. All it takes is to start doing it!
Eat plenty sea food. Reminds me of hiring a sea food specialist from Thailand or Vietnam to be attached with the camp site!
Friday, September 20, 2013
রাজ্জাক.মহেশখালী:
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ সীমান্তবর্তী জেলা শহর কক্সবাজার। এই জেলার উপকুলীয় দ্বীপাঞ্চল জনপদ মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের অন্তর্গত সোনাদিয়া দ্বীপ। ৪’হাজার ৯’শত ২৮ হেক্টর জায়গার উপর অবস্থিত এই দ্বীপ পূর্ব পশ্চিম লম্বা-লম্বী বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ মালার সাথে অবস্থানরত এক অপার সম্ভাবনাময়ী সম্পদে ভরপুর চরাঞ্চল। সৃষ্টিকর্তার সুনিপন সৃষ্টি শৈল্পিক আদলে গড়া কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের আরেক সম্ভাবনাময় পরিচিত অপূর্ব দৃষ্টি নন্দন অপরুপ শোভিত সৈকতের নাম সোনাদিয়া। এই দ্বীপের মোট জমির পরিমান ২’হাজার ৯’শত ৬৫.৩৫ একর। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির পরিমান ০৩.১৫ একর। শুটকী মহাল ০২টি,চিংড়ী চাষ যোগ্য জমির পরিমান ৯৮.০০ একর। বন বিভাগের জমির পরিমান ২১০০ একর। বাকী সব প্রাকৃতিক বনায়ন ও বালুময় চরাঞ্চল। প্রাকৃতিক অপরুপ সৃজিত জীবন বৈচিত্র সমৃদ্ধ সোনাদিয়া দ্বীপ। যেখানে রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত বিশেষ ধরনের বৈশিষ্ট্য মন্ডিত প্যারাবন, দূষণ ও কোলাহল মুক্ত সৈকত। অসংখ্য লাল কাকড়ার মিলন মেলা, পূর্ব পাড়ায় নব্য জেগে উঠা চর, বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কাছিম সহ দৃশ্যাবলী, দ্বীপবাসীর নিজস্ব সংস্কৃতি ও সাদা সিদে জীবন যাপন, পূর্ব পাড়ার হযরত মারহা আউলিয়ার মাজার ও তার আদি ইতিহাস, জেলেদের সাগরের মাছ ধরার দৃশ্য, সূর্যাস্তের দৃশ্য, প্যারাবন বেষ্টিত আকাঁ-বাঁকা নদী পথে নৌকা ভ্রমন, স্পীড বোট বা ইঞ্জিন বোট দিয়ে মহেশখালী চ্যানেল হয়ে সাগরের মাঝ পথে বঙ্গোপসাগরের দৃশ্য অবলোকন যা পর্যটকদের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী বাড়তি আর্কষণ। যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এ দ্বীপে সরকারী বা বেসরকারী ভাবে যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে এ পর্যন্ত পর্যটন আর্কষনের আধুনিক কোন পদক্ষেপ বলতে গেলে নেওয়া হয়নি। সঠিক পরিকল্পনা পূর্বক তা বাস্তবায়ন করা গেলে পর্যটন রাজধানী হিসাবে পরিচিত কক্সবাজার শহরের অতীব নিকটবর্তী এ দ্বীপটি পর্যটন বিকাশে অন্যতম স্থান হতে পারে যা দেশের তথা কক্সবাজারের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি দ্বীপবাসীর জন্য বিকল্প আয়ের ক্ষেত্র সৃষ্টি করবে।
সোনাদিয়ার দ্বীপের নামকরণের সঠিক কোন ঐতিহাসিক তথ্য থাকলেও সোনাদিয়ার দ্বীপকে ঘিরে আদিকাল হতে তথায় সোনা সমতুল্য দামী পন্য মৎস্য সম্পদ আহরিত হত বলে এই দ্বীপ সোনার দ্বীপ তথা সোনাদিয়া বলে পরিচিতি লাভ করে। তাই ঐতিহাসিক ভাবে না হলেও লোক মুখে উচ্চারিত সোনাদিয়ার কথা বির্বতনে সোনাদিয়ার রুপান্তরিত হয়। দ্বীপটি সোনাদিয়া হিসাবে বর্তমানে প্রজন্মের কাছেও বই পুস্তকে স্থান পাচ্ছে। তবে এ ও জনশ্র“তি আছে যে তৎকালে চট্টগ্রামের বাশঁখালী হতে কিছু জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন অস্থায়ী ভাবে সোনাদিয়ার মাছ শিকারে আসতো, দৈবক্রমে একজন জেলে একটি শীলা খন্ড দেখতে পায় যা তার কাছে খুবই আর্কষনীয় এবং মূল্যবান মনে হওয়ার কারণে ঐ জেলে তা নিয়ে ঘরের দরজা সম্মুখে পা ধোয়ায় সিড়ি হিসাবে ব্যবহার শুরু করে। কিছু দিনপর জেলেটি পাথরের শিলটিতে দায়ের শান দিতে গেলে বুঝতে পারে আসলে ঐ পাথরটি মূলত একটি বিরাট স্বর্ণখন্ড। এ ঘটনার কারণে দ্বীপের নাম সোনাদিয়া হয়েছে বলেও শতবর্ষীদের মুখে শোনা যায়। কালক্রমে মানুষ মহেশখালীর অপরাপর এলাকা সমূহে বসবাস শুরু করলেও আদিকাল পরিচিতি সূচনা হয় সোনাদিয়া ঘিরে। কারণ প্রাচিন কালের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র প্রাচীন মাধ্যমে ছিল নদী পথ, তদুপরি মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম ও ছিল মৎস্য শিকার। তাই উভয় কারণে সোনাদিয়ার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে অনেক পূর্ব হতে ঠিক এভাবেই। মহেশখালীতে মূলত ১৫৫৯ সালের ভয়বহ জলোচ্ছাসের পর হতে বসতি আরম্ভ হয় তদপুর্বে মহেশখালী কক্সবাজারের সাথে যুক্ত ছিল বলে ইতিহাসে প্রমান পাওয়া যায়। কালক্রমে মহেশখালী চট্টগ্রাম এলাকা হতে লোকজন এসে বসতি শুরু করে বিশেষ করে পটিয়া, আনোয়ারা, বাশঁখালী, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান ইত্যাদী এলাকা হতে মানুষ এসে মহেশখালীতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের সূচনা করে। তৎমধ্যে বিশেষ ভাবে যারা মাছ শিকার পেশার সাথে পূর্ব হতে জড়িত ছিল এবং সোনাদিয়া সম্মন্ধে অবগত ছিল তারাই সোনাদিয়াতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অধিক উপযুক্ত মনে করত। সোনাদিয়ার প্রাচীন পরিবার হচ্ছে‘‘ ফৌজনীর পরিবার। ব্যক্তি বিশেষে ছাদের আলী, আশরাফ মিয়া, ও আছাদ আলী এদের পরিবার সোনাদিয়ার ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী পরিবার বলা চলে। জনশ্র“তি আছে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই দ্বীপে নাকি একনাগাড়ে অনেক দিন অবস্থান কর ছিলেন। পরবর্তীতে ঐ পরিবার শেখ মুজিবের পক্ষ পতে প্রাপ্ত অবদানের কথা এখনো বলেতে শোনা যায়। বর্তমানে সব মিলে ৮১০জন নর নারীর বসবাস সোনাদিয়ায় তম্মধ্যে ২০০১ সালের অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ৩৮৪জন, অধিবাসীরা মূলত প্রধান পেশা হিসাবে মৎস্য শিকারে জড়িত। কিছু পরিবার চিংড়ী ও লবণ উৎপাদন পেশায় জড়িত আছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও খুবই পরিশ্রমী । পুরুষেরা চিংডি ও সমুদ্্ের গিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে মাছ শিকার হরদম লিপ্ত থাকলেও মেয়েরা পুরুষদের আহরিত মাছ গুলি বাজারজাত করনের যাবতীয় কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। মাছ শুকানো ও গুদামজাত প্রক্রিয়া তো বলতে গেলে নারী ও শিশুরা করে থাকে। এমনিতেই দেশব্যাপী সোনাদিয়ার সামুদ্রিক মাছ এর কদর খুব বেশী । বিশেষ করে শীত মৌসুমে শুকানো বিভিন্ন প্রজাতির সুটকী মাছ ভোজন খুবই সু- স্বাদু । তাই কক্সবাজারে পর্যটনে আসা কোন পর্যটকই সোনাদিয়ার শুটকী ছাড়া ঘরে ফিরতে চায় না । সোনাদিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা তেমন কোন উলে¬খ করার মতো নয় ,তবে পশ্চিম পাড়া আর উত্তর পাড়ায় একটি করে বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। বেশ কয়েকটি মসজিদ ও আছে। স্থানীয় ভাবে প্রচলিত খেলাধুলা হলঃ হা-ডু-ডু, শীলইন খেলা , ডাংগুলী ,গিলাখেলা বিদ্যমান , ফুটবল এবং ক্রিকেটতো আছেই। প্যারাবন মোহনা এলাকায় সৃষ্ট এক বিশেষ ধরনের লোনাপানি ও বন এলাকা সোনাদিয়া এবং তার আশে পাশে এলাকায় অবস্থিত প্যারাবন বাংলাদেশের দক্ষিন পুর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের একমাত্র লোনা জলের প্যারাবন । পুর্ব পার্শ্বে মহেশখালী চ্যানেল এবং পশ্চিমে কোহেলিয়া নদীর পানি দ্বারা বিধৌত এ অঞ্চলে সাদা বাইন , কালো বাইন, কেওড়া , হরগোজা, নোনিয়া সহ প্রায় ত্রিশ প্রজাতির প্যারা সমৃদ্ধ উদ্ভিদ বিদ্যমান । জীব বৈচিত্র সমৃদ্ধ এখানকার খাল , মোহনা , চর ও বন ভূমিতে ঊনিশ প্রজাতির চিংড়ি, চৌদ্দ প্রজাতির শামুক ,ঝিনুক নানা ধরনের কাকড়া (যেমন ,রাজ কাকড়া ,হাব্বা কাকড়া, জাহাজি কাকড়া ,সাতারো কাকড়া ) সহ প্রায় আশি প্রজাতির সাদা মাছ, পঁয়ষট্রি প্রজাতির (বিপন্ন প্রায়) স্থানীয় ও যাযাবর পাখি এবং কমপক্ষে তিন প্রজাতির ডলফিন বিচরণ করে থাকে। বাণিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের মধ্যে কোরাল ,বোল, বাটা ,তাইল¬া ,দাতিনা ,কাউন (কনর মাছ) ও প্যারাবন সমৃদ্ধ এলাকার অন্যান্য মাছ পাওয়া যায়। জনপদ রক্ষায় প্যারাবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্যারাবন ভূমি ক্ষয়রোধ করে পার্শ্ববতী এলাকাকে জলোচ্ছাস ও ঘুর্ণিঝড়ের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হতে রক্ষা করে। পানির পর্যাপ্ত গুনাগুন অক্ষুন্ন রেখে প্যারাবন পার্শ্ববতী এলাকার মৎস্য সম্পদের খাদ্য সরবরাহের অন্যতম যোগানদাতা । প্যারাবন বিশেষ বিশেষ নিয়মে ঘরবাড়ীর আসবাবপত্র ,কাঠ ও জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্যারাবন নানা রকম পাখি ও বন্য প্রাণির নিরাপদ অভয়ারণ্য ,যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশী প্রয়োজনীয় । দ্বীপের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে দ্বীপ বাসীর জীবিকার মান উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার স্বার্থে সর্বোপরি প্যারাবন টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন ।
অপরদিকে সোনাদিয়া দ্বীপ বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এ দ্বীপে যেহেতু পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন সব কর্মকান্ড নিষিদ্ধ এবং প্রচলিত ট্যুারিজমের যেহেতু অনেক ধরনের নীতি বাচক দিক রয়েছে, সুতরাং এই দ্বীপে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে ইকোট্যুারিজমের উন্নয়ন বিকাশ অন্যতম ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এই দ্বীপে দ্বীপবাসীর সম্পৃক্ততায় কমিউনিটি ভিত্তিক ইকোট্যুারিজমের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যা দ্বীপবাসীর বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা সহ অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন উল্লে¬খযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের বিষয়টি বর্তমান বিশ্বে অন্যতম একটি আলোচিত বিষয়। কোন শিল্প স্থায়ীত্ব লাভ করতে পারে না যদি না ঐ শিল্প হতে স্থানীয় জনসাধারণ উপকৃত হয়। যদি কোন শিল্প হতে স্থানীয় জনগণ লাভবান হয় এবং ঐ শিল্প স্থানীয় জনগণের রুজি রোজগারের অন্যতম ভিত্তি হয় তাহলে ঐ শিল্প রক্ষা করার প্রধান দায়িত্ব স্থানীয় জনগণই নিয়ে থাকে। ট্যুরিজম শিল্পের ক্রমবিকাশের পাশা পাশি যখন প্রকৃতি ও পরিবেশ পরিস্থিতি সংরক্ষণের কথা আসে তখনই ট্যুারিজমে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততার গুরুত্ব আসে বেশী, কারণ বাস্তবতার দেখা যায় যখন কোন এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে ঐ এলাকার জনগণ সামগ্রিক ভাবে লাভবান হয় তখন তারাই এর রক্ষনাবেক্ষনের মুখ্য ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসে।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ সীমান্তবর্তী জেলা শহর কক্সবাজার। এই জেলার উপকুলীয় দ্বীপাঞ্চল জনপদ মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের অন্তর্গত সোনাদিয়া দ্বীপ। ৪’হাজার ৯’শত ২৮ হেক্টর জায়গার উপর অবস্থিত এই দ্বীপ পূর্ব পশ্চিম লম্বা-লম্বী বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ মালার সাথে অবস্থানরত এক অপার সম্ভাবনাময়ী সম্পদে ভরপুর চরাঞ্চল। সৃষ্টিকর্তার সুনিপন সৃষ্টি শৈল্পিক আদলে গড়া কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের আরেক সম্ভাবনাময় পরিচিত অপূর্ব দৃষ্টি নন্দন অপরুপ শোভিত সৈকতের নাম সোনাদিয়া। এই দ্বীপের মোট জমির পরিমান ২’হাজার ৯’শত ৬৫.৩৫ একর। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির পরিমান ০৩.১৫ একর। শুটকী মহাল ০২টি,চিংড়ী চাষ যোগ্য জমির পরিমান ৯৮.০০ একর। বন বিভাগের জমির পরিমান ২১০০ একর। বাকী সব প্রাকৃতিক বনায়ন ও বালুময় চরাঞ্চল। প্রাকৃতিক অপরুপ সৃজিত জীবন বৈচিত্র সমৃদ্ধ সোনাদিয়া দ্বীপ। যেখানে রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত বিশেষ ধরনের বৈশিষ্ট্য মন্ডিত প্যারাবন, দূষণ ও কোলাহল মুক্ত সৈকত। অসংখ্য লাল কাকড়ার মিলন মেলা, পূর্ব পাড়ায় নব্য জেগে উঠা চর, বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কাছিম সহ দৃশ্যাবলী, দ্বীপবাসীর নিজস্ব সংস্কৃতি ও সাদা সিদে জীবন যাপন, পূর্ব পাড়ার হযরত মারহা আউলিয়ার মাজার ও তার আদি ইতিহাস, জেলেদের সাগরের মাছ ধরার দৃশ্য, সূর্যাস্তের দৃশ্য, প্যারাবন বেষ্টিত আকাঁ-বাঁকা নদী পথে নৌকা ভ্রমন, স্পীড বোট বা ইঞ্জিন বোট দিয়ে মহেশখালী চ্যানেল হয়ে সাগরের মাঝ পথে বঙ্গোপসাগরের দৃশ্য অবলোকন যা পর্যটকদের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী বাড়তি আর্কষণ। যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এ দ্বীপে সরকারী বা বেসরকারী ভাবে যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে এ পর্যন্ত পর্যটন আর্কষনের আধুনিক কোন পদক্ষেপ বলতে গেলে নেওয়া হয়নি। সঠিক পরিকল্পনা পূর্বক তা বাস্তবায়ন করা গেলে পর্যটন রাজধানী হিসাবে পরিচিত কক্সবাজার শহরের অতীব নিকটবর্তী এ দ্বীপটি পর্যটন বিকাশে অন্যতম স্থান হতে পারে যা দেশের তথা কক্সবাজারের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি দ্বীপবাসীর জন্য বিকল্প আয়ের ক্ষেত্র সৃষ্টি করবে।
সোনাদিয়ার দ্বীপের নামকরণের সঠিক কোন ঐতিহাসিক তথ্য থাকলেও সোনাদিয়ার দ্বীপকে ঘিরে আদিকাল হতে তথায় সোনা সমতুল্য দামী পন্য মৎস্য সম্পদ আহরিত হত বলে এই দ্বীপ সোনার দ্বীপ তথা সোনাদিয়া বলে পরিচিতি লাভ করে। তাই ঐতিহাসিক ভাবে না হলেও লোক মুখে উচ্চারিত সোনাদিয়ার কথা বির্বতনে সোনাদিয়ার রুপান্তরিত হয়। দ্বীপটি সোনাদিয়া হিসাবে বর্তমানে প্রজন্মের কাছেও বই পুস্তকে স্থান পাচ্ছে। তবে এ ও জনশ্র“তি আছে যে তৎকালে চট্টগ্রামের বাশঁখালী হতে কিছু জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন অস্থায়ী ভাবে সোনাদিয়ার মাছ শিকারে আসতো, দৈবক্রমে একজন জেলে একটি শীলা খন্ড দেখতে পায় যা তার কাছে খুবই আর্কষনীয় এবং মূল্যবান মনে হওয়ার কারণে ঐ জেলে তা নিয়ে ঘরের দরজা সম্মুখে পা ধোয়ায় সিড়ি হিসাবে ব্যবহার শুরু করে। কিছু দিনপর জেলেটি পাথরের শিলটিতে দায়ের শান দিতে গেলে বুঝতে পারে আসলে ঐ পাথরটি মূলত একটি বিরাট স্বর্ণখন্ড। এ ঘটনার কারণে দ্বীপের নাম সোনাদিয়া হয়েছে বলেও শতবর্ষীদের মুখে শোনা যায়। কালক্রমে মানুষ মহেশখালীর অপরাপর এলাকা সমূহে বসবাস শুরু করলেও আদিকাল পরিচিতি সূচনা হয় সোনাদিয়া ঘিরে। কারণ প্রাচিন কালের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র প্রাচীন মাধ্যমে ছিল নদী পথ, তদুপরি মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম ও ছিল মৎস্য শিকার। তাই উভয় কারণে সোনাদিয়ার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে অনেক পূর্ব হতে ঠিক এভাবেই। মহেশখালীতে মূলত ১৫৫৯ সালের ভয়বহ জলোচ্ছাসের পর হতে বসতি আরম্ভ হয় তদপুর্বে মহেশখালী কক্সবাজারের সাথে যুক্ত ছিল বলে ইতিহাসে প্রমান পাওয়া যায়। কালক্রমে মহেশখালী চট্টগ্রাম এলাকা হতে লোকজন এসে বসতি শুরু করে বিশেষ করে পটিয়া, আনোয়ারা, বাশঁখালী, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান ইত্যাদী এলাকা হতে মানুষ এসে মহেশখালীতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের সূচনা করে। তৎমধ্যে বিশেষ ভাবে যারা মাছ শিকার পেশার সাথে পূর্ব হতে জড়িত ছিল এবং সোনাদিয়া সম্মন্ধে অবগত ছিল তারাই সোনাদিয়াতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অধিক উপযুক্ত মনে করত। সোনাদিয়ার প্রাচীন পরিবার হচ্ছে‘‘ ফৌজনীর পরিবার। ব্যক্তি বিশেষে ছাদের আলী, আশরাফ মিয়া, ও আছাদ আলী এদের পরিবার সোনাদিয়ার ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী পরিবার বলা চলে। জনশ্র“তি আছে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই দ্বীপে নাকি একনাগাড়ে অনেক দিন অবস্থান কর ছিলেন। পরবর্তীতে ঐ পরিবার শেখ মুজিবের পক্ষ পতে প্রাপ্ত অবদানের কথা এখনো বলেতে শোনা যায়। বর্তমানে সব মিলে ৮১০জন নর নারীর বসবাস সোনাদিয়ায় তম্মধ্যে ২০০১ সালের অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ৩৮৪জন, অধিবাসীরা মূলত প্রধান পেশা হিসাবে মৎস্য শিকারে জড়িত। কিছু পরিবার চিংড়ী ও লবণ উৎপাদন পেশায় জড়িত আছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও খুবই পরিশ্রমী । পুরুষেরা চিংডি ও সমুদ্্ের গিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে মাছ শিকার হরদম লিপ্ত থাকলেও মেয়েরা পুরুষদের আহরিত মাছ গুলি বাজারজাত করনের যাবতীয় কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। মাছ শুকানো ও গুদামজাত প্রক্রিয়া তো বলতে গেলে নারী ও শিশুরা করে থাকে। এমনিতেই দেশব্যাপী সোনাদিয়ার সামুদ্রিক মাছ এর কদর খুব বেশী । বিশেষ করে শীত মৌসুমে শুকানো বিভিন্ন প্রজাতির সুটকী মাছ ভোজন খুবই সু- স্বাদু । তাই কক্সবাজারে পর্যটনে আসা কোন পর্যটকই সোনাদিয়ার শুটকী ছাড়া ঘরে ফিরতে চায় না । সোনাদিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা তেমন কোন উলে¬খ করার মতো নয় ,তবে পশ্চিম পাড়া আর উত্তর পাড়ায় একটি করে বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। বেশ কয়েকটি মসজিদ ও আছে। স্থানীয় ভাবে প্রচলিত খেলাধুলা হলঃ হা-ডু-ডু, শীলইন খেলা , ডাংগুলী ,গিলাখেলা বিদ্যমান , ফুটবল এবং ক্রিকেটতো আছেই। প্যারাবন মোহনা এলাকায় সৃষ্ট এক বিশেষ ধরনের লোনাপানি ও বন এলাকা সোনাদিয়া এবং তার আশে পাশে এলাকায় অবস্থিত প্যারাবন বাংলাদেশের দক্ষিন পুর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের একমাত্র লোনা জলের প্যারাবন । পুর্ব পার্শ্বে মহেশখালী চ্যানেল এবং পশ্চিমে কোহেলিয়া নদীর পানি দ্বারা বিধৌত এ অঞ্চলে সাদা বাইন , কালো বাইন, কেওড়া , হরগোজা, নোনিয়া সহ প্রায় ত্রিশ প্রজাতির প্যারা সমৃদ্ধ উদ্ভিদ বিদ্যমান । জীব বৈচিত্র সমৃদ্ধ এখানকার খাল , মোহনা , চর ও বন ভূমিতে ঊনিশ প্রজাতির চিংড়ি, চৌদ্দ প্রজাতির শামুক ,ঝিনুক নানা ধরনের কাকড়া (যেমন ,রাজ কাকড়া ,হাব্বা কাকড়া, জাহাজি কাকড়া ,সাতারো কাকড়া ) সহ প্রায় আশি প্রজাতির সাদা মাছ, পঁয়ষট্রি প্রজাতির (বিপন্ন প্রায়) স্থানীয় ও যাযাবর পাখি এবং কমপক্ষে তিন প্রজাতির ডলফিন বিচরণ করে থাকে। বাণিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের মধ্যে কোরাল ,বোল, বাটা ,তাইল¬া ,দাতিনা ,কাউন (কনর মাছ) ও প্যারাবন সমৃদ্ধ এলাকার অন্যান্য মাছ পাওয়া যায়। জনপদ রক্ষায় প্যারাবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্যারাবন ভূমি ক্ষয়রোধ করে পার্শ্ববতী এলাকাকে জলোচ্ছাস ও ঘুর্ণিঝড়ের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হতে রক্ষা করে। পানির পর্যাপ্ত গুনাগুন অক্ষুন্ন রেখে প্যারাবন পার্শ্ববতী এলাকার মৎস্য সম্পদের খাদ্য সরবরাহের অন্যতম যোগানদাতা । প্যারাবন বিশেষ বিশেষ নিয়মে ঘরবাড়ীর আসবাবপত্র ,কাঠ ও জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্যারাবন নানা রকম পাখি ও বন্য প্রাণির নিরাপদ অভয়ারণ্য ,যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশী প্রয়োজনীয় । দ্বীপের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে দ্বীপ বাসীর জীবিকার মান উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার স্বার্থে সর্বোপরি প্যারাবন টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন ।
অপরদিকে সোনাদিয়া দ্বীপ বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এ দ্বীপে যেহেতু পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন সব কর্মকান্ড নিষিদ্ধ এবং প্রচলিত ট্যুারিজমের যেহেতু অনেক ধরনের নীতি বাচক দিক রয়েছে, সুতরাং এই দ্বীপে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে ইকোট্যুারিজমের উন্নয়ন বিকাশ অন্যতম ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এই দ্বীপে দ্বীপবাসীর সম্পৃক্ততায় কমিউনিটি ভিত্তিক ইকোট্যুারিজমের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যা দ্বীপবাসীর বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা সহ অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন উল্লে¬খযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের বিষয়টি বর্তমান বিশ্বে অন্যতম একটি আলোচিত বিষয়। কোন শিল্প স্থায়ীত্ব লাভ করতে পারে না যদি না ঐ শিল্প হতে স্থানীয় জনসাধারণ উপকৃত হয়। যদি কোন শিল্প হতে স্থানীয় জনগণ লাভবান হয় এবং ঐ শিল্প স্থানীয় জনগণের রুজি রোজগারের অন্যতম ভিত্তি হয় তাহলে ঐ শিল্প রক্ষা করার প্রধান দায়িত্ব স্থানীয় জনগণই নিয়ে থাকে। ট্যুরিজম শিল্পের ক্রমবিকাশের পাশা পাশি যখন প্রকৃতি ও পরিবেশ পরিস্থিতি সংরক্ষণের কথা আসে তখনই ট্যুারিজমে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততার গুরুত্ব আসে বেশী, কারণ বাস্তবতার দেখা যায় যখন কোন এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে ঐ এলাকার জনগণ সামগ্রিক ভাবে লাভবান হয় তখন তারাই এর রক্ষনাবেক্ষনের মুখ্য ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসে।
Subscribe to:
Posts (Atom)